মাইগ্রেনের ব্যাথার সাথে মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার সম্পর্ক
মাইগ্রেন এক বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। তবে সব মাথাব্যথাই মাইগ্রেন নয়। এ ব্যথা মাথার যেকোনো এক পাশ থেকে শুরু হয়ে পুরো মাথায় হতে পারে। পুরুষের চেয়ে নারীদের ব্যাথাটি বেশি হয়। আজ জানবো মাইগ্রেন কি এবং মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার সাথে এর সম্পর্ক সমন্ধে।
মাইগ্রেন এক বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। তবে সব মাথাব্যথাই মাইগ্রেন নয়। এ ব্যথা মাথার যেকোনো এক পাশ থেকে শুরু হয়ে পুরো মাথায় হতে পারে। পুরুষের চেয়ে নারীদের ব্যাথাটি বেশি হয়। আজ জানবো মাইগ্রেন কি এবং মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার সাথে এর সম্পর্ক সমন্ধে।
মাইগ্রেন কী?
মাইগ্রেন হচ্ছে একধরনের মাথাব্যথা। এ ব্যথা সাধারণত মাথার এক দিকে হয়। তবে কখনো এ ব্যথা মাথার দুদিকেও হতে পারে। মাইগ্রেনের সমস্যাটি সামান্য শব্দ, আলো, গন্ধ, বাতাসের চাপের তারতম্য কিংবা কোন খাবারের প্রভাবে শুরু হতে পারে। মাথাব্যথা শুরু হলে তা কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মাথার যেকোনো অংশ থেকে এ ব্যথা শুরু হতে পারে এবং পরে তা পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়তে পারে| এ রোগের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে মাথাব্যথা ও বমি ভাব। এছাড়া মাথাব্যথা শুরুর আগে অন্যান্য উপসর্গ যেমন অতিরিক্ত হাই তোলা, কোনো কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তিবোধ ইত্যাদি হতে পারে।
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার সাথে মাইগ্রেনের সম্পর্ক:
যখন কেউ ভয়ানক এবং ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির স্বীকার হোন যেমন হঠাৎ খুব মন্দ বা কস্টকর সংবাদ পাওয়া, খুবই ঝামেলাপূর্ণ দিন অতিবাহিত করা ইত্যাদি কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা তীব্র আকার ধারন করতে পারে। স্ট্রেস বা কঠিন মানুসিক চাপও এর বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। যখন কেউ স্ট্রেস বা কঠিন মানসিক চাপগ্রস্থ থাকে তখন শরীরের কিছু উপাদান ও হরমোনের মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায়। এর ফলেও মাইগ্রেনের ব্যথা বেড়ে যায়।
কোন কোন ধরনের স্ট্রেস মাইগ্রেনের ব্যথা বৃদ্ধির জন্য দায়ী?
মাইগ্রেনের ব্যথা বৃদ্ধির জন্য কিছু স্ট্রেস সম্পন্য অবস্থা দায়ী। অবস্থা সমূহ হলো-
- বিভিন্ন কাজের চিন্তা।
- বিবাহ বা এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ঝামেলা।
- চাকুরী না পাওয়া অথবা নিম্ন আয়ের কারণে অর্থ সংকট ।
- বাবা –মার বিচ্ছেদ সংক্রান্ত কারণে মানসিক বিপর্যস্ত সন্তান।
- শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।
- দীর্ঘ সময় হাসপাতালে অবস্থান।
- পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব।
- চতুর্পাশের পরিবেশে উচ্চ আওয়াজ বা তীক্ষ্ণ আলোর উপস্থিতি।
- কোন বিষয়ে অতিরিক্ত উদবিঘ্ন হওয়া।
- জীবন যাপনের সাথে কাজের ব্যালেন্স না পাওয়া।
মাইগ্রেন সংক্রান্ত মাথা ব্যথা মোকাবেলার উপায়:
মাইগ্রেনের চিকিৎসায় প্রতিরোধক ওষুধের পাশাপাশি দৈনন্দিন কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে সমস্যাটি অনেকাংশে কমিয়ে রাখা যায়। এগুলো হলো-
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ও পরিমিত পরিমাণে ঘুমাতে হবে ।
- কম বা অতিরিক্ত আলোতে কাজ করা যাবেনা।
- তীব্র রোদ বা ঠান্ডা পরিহার করতে হবে।
- কোলাহলপূর্ণ ও উচ্চশব্দ সম্পন্য পরিবেশে বেশিক্ষণ থাকা যাবেনা।
- একাধারে ও অধিক সময় কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে থাকা যাবেনা।
- মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
- বমি হলে বিশ্রামসহ মাথায় ঠান্ডা কাপড় জড়িয়ে রাখতে হবে।
- অতিরিক্ত টেনশন করা যাবেনা।
- অধিক রাত জাগা যাবেনে৷
- হাসি-খুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে ও জীবনের আনন্দকে উপভোগ করতে হবে৷
মাইগ্রেন থেকে দূরে থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে নিয়মানুবর্তী থাকা ও ঘুমের ব্যাপারে সতর্ক হওয়া, তীব্র আলো বা শব্দ থেকে দূরে থাকা। নিজের কাজের মধ্যে গতিশীলতা খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। একই সাথে মাইগ্রেনের ব্যাপারে আশেপাশের মানুষকেও সচেতন করাটা খুব জরুরী।