লজ্জা নয়, জীবন বাঁচাতে স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে জানুন
সারা বিশ্বে মহিলাদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো স্তন ক্যান্সার । শুধু মাত্র মহিলা নয় পুরুষদেরও স্তন ক্যান্সার হতে পারে। পরিবারে কারোর এ সমস্যা থাকলে অন্যদেরও আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে। আসুন এ সন্মন্ধে বিস্তারিত জেনে নিই।
সারা বিশ্বে মহিলাদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো স্তন ক্যান্সার । শুধু মাত্র মহিলা নয় পুরুষদেরও স্তন ক্যান্সার হতে পারে। পরিবারে কারোর এ সমস্যা থাকলে অন্যদেরও আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে। আসুন এ সন্মন্ধে বিস্তারিত জেনে নিই।
কাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশী?
স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেশি রয়েছে তারা হলেন -
- মহিলাদের মধ্যে যাদের বয়স ৬০ বছর বয়সের বেশি।
- পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
- যাদের ইতিমধ্যে একটি স্তনে ক্যান্সারের ইতিহাস আছে তাদের অপরটিতেও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
- যার পরিবারের নিকট আত্মীয় যেমন মা, বোন অথবা মেয়ের স্তন ক্যান্সার আছে।
- কারও শরীরে স্তন ক্যান্সারের জীন (gene) সুপ্ত অবস্থায় থাকলে।
- শরীর কোন ক্ষতিকারক তেজস্ক্রিয় রশ্মির সংস্পর্শে এলে।
- শরীর অস্বাভাবিকভাবে মোটা হয়ে গেলে।
- অল্প বয়সেই মাসিক শুরু হয়ে গেলে।
- বেশি বয়সে প্রথম বাচ্চা নিলে।
- অবিবাহিতা বা সন্তানহীনা নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
- যেসব মায়েরা সন্তানকে কখনও স্তন্যপান (breast feeding) করান না তাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
- বেশি বয়সে রজঃনিবৃত্তি বা মেনোপজ (Menopause) হলে।
- যেসব মহিলারা অতিরিক্ত হরমোন থেরাপী নেন।
স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণসমূহ:
সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারলে স্তন ক্যান্সারের ভয়াবহতা ও মৃত্যু থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। নিম্নের লক্ষণগুলোর যেকোনো একটি দেখা দিলেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরার্মশ অনুযায়ী পরীক্ষা নিরীক্ষা করে স্তন ক্যান্সার হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে ।
- স্তনের আকার পরিবর্তিত হওয়া ।
- স্তনের ভিতর চাকা (breast lump) অনুভব করা।
- স্তনে বা স্তনবৃন্তে প্রচণ্ড ব্যথা এবং বৃন্তটি ভেতর দিকে চুপসে যাওয়া।
- শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় স্তনের বোটা (breast nipple) থেকে দুধ না বেরিয়ে কষ বর্ণের কোনো তরল বের হয়ে আসা।
- স্তনের ত্বকে লালচে ভাব/দাগ দেখা দেয়া।
- স্তনের ত্বকে ঘাঁ দেখা দেয়া, ইত্যাদি।
স্তন ক্যান্সার থেকে বেঁচে থাকার উপায়ঃ
স্তন ক্যান্সারের যেহেতু নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। তাই ঝুঁকি এড়াতে এ সম্পর্কে সচেতনতার পাশাপাশি নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করা খুবই জরুরী। যে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে সেগুলো হলো-
- বয়স ৩০ বছর হয়ে গেলে অবশ্যই প্রতিমাসে মাসিকের পর নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করতে হবে।
- যেসব নারীর পরিবারে স্তন ক্যান্সার রয়েছে/হয়েছে অর্থাৎ স্তন ক্যান্সারের অতিরিক্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন এমন মহিলাদের প্রতিবছর (৪০ বছরের পর) মেমোগ্রাম করতে হবে।
- ৩০ বছর বয়সের মধ্যে প্রথম সন্তান জন্ম দেওয়া ও সন্তানকে নিয়মিত বুকের দুধ পান করাতে হবে।
- ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাস থাকলে তা অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে।
- খাবার তালিকায় প্রচুর টাটকা শাকসবজি ও ফলমূল রাখতে হবে এবং নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম/পরিশ্রম করতে হবে।
- স্তনে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
স্তন ক্যান্সার আক্রান্তের হার দিন দিন এবং দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার সনাক্ত করতে পারলে ও সঠিক চিকিৎসা করতে পারলে আক্রান্ত ৯০% রোগীকে ৫ বৎসর বা তার চেয়ে বেশি সময় বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। তাই স্তন ক্যান্সার হতে বেঁচে থাকতে ক্যান্সারের ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জানার পাশাপাশি সচেতন ও সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।