চিয়া সিড এর পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা
চিয়া সিড বা চিয়া বীজ মরুভূমিতে জন্মানো সালভিয়া হিসপানিকা (Salvia Hispanica) উদ্ভিদের বীজ। এই অতি উপকারি বীজটির আদি জন্মস্থান সেন্ট্রাল আমেরিকা এবং সেখানকার প্রাচীন আদিবাসি অ্যাজটেক জাতির খাদ্য তালিকায় এই বীজ অন্তর্ভুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
প্রাচীন মায়া এবং অ্যাজটেক জাতির মানুষ চিয়া সিডকে সোনার থেকেও মূল্যবাণ মনে করত। তারা বিশ্বাস করত এটা তাদের শক্তি ও সাহস জোগাবে।
চিয়া সীড সব ধরণের আবহাওয়ায় হয় এবং এতে পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন হয় না। চিয়া বীজ সাদা ও কালো রং এর এবং তিলের মত ছোট সাইজের হয়। এখানে উল্লেখ্য যে চিয়া সীড এবং তোকমা নিয়ে একটি ভুল ধারণা আছে। অনেকেই তোকমাকে ভুল করে চিয়া সীড মনে করেন। চিয়া সীড তোকমার চেয়ে সাইজে ছোট, তবে এ দু’টোর পুষ্টিগুণ প্রায় একই। তোকমার ইংরেজি নাম ব্যাসিল সীড (Basil seed)।চিয়া একটি সুপার সীড যাতে আছে প্রচুর পরিমানে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড; কোয়েরসেটিন (Quercetin) কেম্পফেরল (Kaempferol) ক্লোরোজেনিক এসিড (Chlorogenic acid) এবং ক্যাফিক এসিড (Caffeic acid) নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট; পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় আঁশ (ফাইবার)।
চিয়া সীড এর ভিতর এমন কি আছে যে, এখন সকলে চিয়া সীড খাওয়ার দিকে ঝুকছে
জয়েন্টের ব্যাথা, হাড় ক্ষয়রোধ, বার্ধক্য প্রতিরোধ, ওজন কমাতে, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার প্রতিরোধে, চিয়া সীড অনন্য।
চিয়া সিড ( chia seed ) আমাদের অনেকের কাছে পরিচিত হলেও চিয়া সিড কি, চিয়া সিড এর উপকারিতা ও চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম অধিকাংশই জানিনা। না জানার কারণে চিয়া সিডের অসাধারণ সব উপকারিতা থেকে প্রতিনিয়ত আমরা নিজেদেরকে বঞ্চিত করছি।
চিয়া সীডের পুষ্টিগুণ:
ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (United States Department of Agriculture) বা ইউএসডিএ (USDA) এর ন্যাশনাল নিউট্রিয়েন্ট ডাটাবেজ হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ৩.৫ আউন্স (১০০ গ্রাম) চিয়া সিডে রয়েছেঃ
৪৮৬ ক্যালোরি, ৬% পানি, ৪২.১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩৪.৪ গ্রাম ফাইবার বা খাদ্যআঁশ,১৬.৫ গ্রাম প্রোটিন,০ গ্রাম চিনি, ০% গ্লুটেন, ৩০.৭ গ্রাম ফ্যাট
দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশী ক্যালসিয়াম
কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি
পালং শাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশী আয়রন (লোহা)
কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম
স্যামন মাছের থেকে ৮ গুণ বেশী ওমেগা-৩
চিয়া বীজের ব্যবহার
চিয়া সিড সরাসরি যে কোন ফলের স্মুদি বা জুসের সাথে পান করা যায়। শুধু পানিতে মিশিয়েও পান করা যায়। চিয়া বীজের নিরপেক্ষ স্বাদের কারণে এটা সব ধরনের খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার উপযুক্ত। বেক করা খাবার (বিস্কুট, কেক ইত্যাদি), সুপ, সালাদ ইত্যাদির সাথে মিশিয়েও চিয়া সীড খাওয়া যায়।
সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ স্বরূপ। বর্তমান সময়ে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকল বয়সের সকল পেশার মানুষই পূর্বের তুলনায় নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে বেশি সচেতন। আর সেই সচেতনতার রোজনামচায় একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছে বেশ কিছু খাদ্য উপাদান, যেগুলোর মধ্যে চিয়া সিড অন্যতম।
চিয়া সিড বর্তমান সময়ে আলোচিত একটি নাম হলেও অনেকেই হয়ত এর পুষ্টি গুণাগুণ সম্পর্কে অজ্ঞ। আর তাদের জন্যেই আজকের এই আর্টিকেলটি। আমরা আর্টিকেলটি পড়া শেষে চিয়া সিড কি ( What is chia seed in Bangla )? চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা, চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম এবং চিয়া সিডের তৈরি খাবার রেসিপি সম্পর্কে জানবো ইন-শা-আল্লাহ।
এছাড়াও চিয়া সিড আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম, জিংক, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদানের দৈনন্দিন পুষ্টিচাহিদাকে পূরণ করতে সক্ষম হলেও এতে ফলেট, ভিটামিন এ এবং কপারের আধিক্য প্রায় নেই বললেই চলে। তবে এতে ভিটামিন বি-১ এর উৎস হিসেবে থায়ামিন (thiamine) রয়েছে দৈনন্দিন খাদ্য চাহিদার প্রায় ১৫ শতাংশ, এবং ভিটামিন বি-৩ এর উৎস হিসেবে নায়াসিন (niacin) রয়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ
সুপারফুড চিয়া সীডের ১৩ টি উপকারিতা:
১। চিয়া বীজ ওজন কমাতে সহায়তা করে।
২। চিয়া সীড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে
৩।এটা শক্তি এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে
৪। চিয়া সিড ব্লাড সুগার (রক্তের চিনি) স্বাভাবিক রাখে, ফলে ডায়াবেটিস ঝুঁকি কমায়
৫। চিয়া বীজ হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ উপকারি
৬। চিয়া সিড মলাশয় (colon) পরিষ্কার রাখে ফলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
৭। চিয়া সিড শরীর থেকে টক্সিন (বিষাক্ত পদার্থ) বের করে দেয়
৮। চিয়া সীড প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে
৯। চিয়া সীড ভাল ঘুম হতে সাহায্য করে
১০। চিয়া বীজ ক্যান্সার রোধ করে
১১। চিয়া সিড হজমে সহায়তা করে
১২। চিয়া বীজ হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করে
১৩। চিয়া সিড ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে
ওজন কমাতে কার্যকর
চিয়া সিডে উচ্চমাত্রার ফাইবার এবং প্রোটিন থাকায় যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য এটি বেশ উপকারী। প্রতি ২৮ গ্রাম চিয়া সিডে ১০ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার থাকে, যা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যচাহিদার প্রায় ৩৫%।
চিয়া সিডে বিদ্যমান ফাইবার বা খাদ্যআঁশ মূলত দ্রবণীয়। এটি পানি শোষণ করে জেলির ন্যায় থকথকে আঠালো বর্ণ ধারণ করে এবং আমাদের পাকস্থলীতে যেয়ে বিপাকপ্রক্রিয়ার গতি ধীর করে আনে। ফলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে এবং ক্ষুধা কম লাগে।
গবেষণা থেকে প্রমাণিত, দ্রবণীয় খাদ্যআঁশ আমাদের দেহে মেটাবোলিজম বুস্ট করে ওজন কমাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে যারা ওভারওয়েইট এবং ওবেসিটিতে আক্রান্ত।
২০০৯ সালের একটি গবেষণায় টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৭৭ জন স্থুলকায় ব্যক্তিকে ৬ মাসের জন্য চিয়া সিড সমৃদ্ধ সুষম খাদ্যাভ্যাসের রুটিন ফলো করানো হয়।
অপরদিকে, অন্য একটি দলকে শুধুমাত্র প্লেসবো (placebo) গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়। নির্দিষ্ট সময় পর দেখা যায় যে, চিয়া সিড গ্রহণকারী দলটি প্লেসবো গ্রহণকারী দলের তুলনায় ওজন দ্রুত কমাতে সক্ষম হয়েছেন, এমনকি এই সুষম খাদ্যাভ্যাসটি তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসে কোনরকম প্রভাবও ফেলেনি।
এছাড়াও, চিয়া সিডের প্রোটিন আমাদের ক্ষুধা নিবারণ এবং অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণের প্রবণতা কমিয়ে আনে। পাবমেড সেন্ট্রাল (PubMed Central) কর্তৃক প্রকাশিত একটি গবেষণায় দুইটি পৃথক দলকে দুইরকম খাবার প্রাতঃরাশে দেয়া হয়। প্রথম দলকে ৭ গ্রাম চিয়া সিড প্রতিদিন টকদইয়ের সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়, এবং ২য় দলকে চিয়া সিড ছাড়া শুধু টকদই খেতে দেয়া হয়।
কয়েকদিন ব্যাপী চলা এই গবেষণা শেষে দেখা যায় যে, যারা প্রাতঃরাশে শুধুমাত্র টকদই খেয়েছেন তাদের তুলনায় যারা টকদই এবং চিয়া সিডের মিশ্রণ খেয়েছেন তারা তুলনামূলকভাবে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের প্রবণতা কমিয়ে আনতে পেরেছেন এবং অল্পেই পূর্ণতা পেয়েছেন।
সুতরাং দেহের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে সুস্থ থাকার জন্য চিয়া সিডের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। তবে অবশ্যই ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিয়ে সুষম খাদ্যাভ্যাসের সঠিক নিয়ম মেনেই তা ডায়েট চার্টে যোগ করতে হবে।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম | how to eat chia seeds
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম অনেক রয়েছে। বিভিন্ন পদ্ধতিতেই চিয়া সিড খাওয়া যায়, যেমন:
স্মুথি বানিয়ে
সালাদ হিসেবে
ড্রিংকস তৈরি করে
চিয়া সিডকে আলাদা করে রান্না করা লাগে না, বরং এটি কিছু নির্দিষ্ট খাবারের (ওটস, পুডিং, জুস, স্মুদি ইত্যাদি) সাথে মিশিয়ে খেয়ে নেয়া যায়। এছাড়াও কেউ চাইলে টকদই, সিরিয়াল, রান্না করা সবজি বা সালাদের ওপরে ছড়িয়েও খেতে পারেন।
প্রাচীন মায়া এবং অ্যাজটেক জাতির মানুষ চিয়া সিডকে সোনার থেকেও মূল্যবাণ মনে করত। তারা বিশ্বাস করত এটা তাদের শক্তি ও সাহস জোগাবে।
চিয়া সীড সব ধরণের আবহাওয়ায় হয় এবং এতে পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন হয় না। চিয়া বীজ সাদা ও কালো রং এর এবং তিলের মত ছোট সাইজের হয়। এখানে উল্লেখ্য যে চিয়া সীড এবং তোকমা নিয়ে একটি ভুল ধারণা আছে। অনেকেই তোকমাকে ভুল করে চিয়া সীড মনে করেন। চিয়া সীড তোকমার চেয়ে সাইজে ছোট, তবে এ দু’টোর পুষ্টিগুণ প্রায় একই। তোকমার ইংরেজি নাম ব্যাসিল সীড (Basil seed)।চিয়া একটি সুপার সীড যাতে আছে প্রচুর পরিমানে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড; কোয়েরসেটিন (Quercetin) কেম্পফেরল (Kaempferol) ক্লোরোজেনিক এসিড (Chlorogenic acid) এবং ক্যাফিক এসিড (Caffeic acid) নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট; পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় আঁশ (ফাইবার)।
চিয়া সীড এর ভিতর এমন কি আছে যে, এখন সকলে চিয়া সীড খাওয়ার দিকে ঝুকছে
জয়েন্টের ব্যাথা, হাড় ক্ষয়রোধ, বার্ধক্য প্রতিরোধ, ওজন কমাতে, ডায়াবেটিস ও ক্যান্সার প্রতিরোধে, চিয়া সীড অনন্য।
চিয়া সিড ( chia seed ) আমাদের অনেকের কাছে পরিচিত হলেও চিয়া সিড কি, চিয়া সিড এর উপকারিতা ও চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম অধিকাংশই জানিনা। না জানার কারণে চিয়া সিডের অসাধারণ সব উপকারিতা থেকে প্রতিনিয়ত আমরা নিজেদেরকে বঞ্চিত করছি।
চিয়া সীডের পুষ্টিগুণ:
ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (United States Department of Agriculture) বা ইউএসডিএ (USDA) এর ন্যাশনাল নিউট্রিয়েন্ট ডাটাবেজ হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ৩.৫ আউন্স (১০০ গ্রাম) চিয়া সিডে রয়েছেঃ
৪৮৬ ক্যালোরি, ৬% পানি, ৪২.১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩৪.৪ গ্রাম ফাইবার বা খাদ্যআঁশ,১৬.৫ গ্রাম প্রোটিন,০ গ্রাম চিনি, ০% গ্লুটেন, ৩০.৭ গ্রাম ফ্যাট
দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশী ক্যালসিয়াম
কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি
পালং শাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশী আয়রন (লোহা)
কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম
স্যামন মাছের থেকে ৮ গুণ বেশী ওমেগা-৩
চিয়া বীজের ব্যবহার
চিয়া সিড সরাসরি যে কোন ফলের স্মুদি বা জুসের সাথে পান করা যায়। শুধু পানিতে মিশিয়েও পান করা যায়। চিয়া বীজের নিরপেক্ষ স্বাদের কারণে এটা সব ধরনের খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার উপযুক্ত। বেক করা খাবার (বিস্কুট, কেক ইত্যাদি), সুপ, সালাদ ইত্যাদির সাথে মিশিয়েও চিয়া সীড খাওয়া যায়।
সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ স্বরূপ। বর্তমান সময়ে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকল বয়সের সকল পেশার মানুষই পূর্বের তুলনায় নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে বেশি সচেতন। আর সেই সচেতনতার রোজনামচায় একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছে বেশ কিছু খাদ্য উপাদান, যেগুলোর মধ্যে চিয়া সিড অন্যতম।
চিয়া সিড বর্তমান সময়ে আলোচিত একটি নাম হলেও অনেকেই হয়ত এর পুষ্টি গুণাগুণ সম্পর্কে অজ্ঞ। আর তাদের জন্যেই আজকের এই আর্টিকেলটি। আমরা আর্টিকেলটি পড়া শেষে চিয়া সিড কি ( What is chia seed in Bangla )? চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা, চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম এবং চিয়া সিডের তৈরি খাবার রেসিপি সম্পর্কে জানবো ইন-শা-আল্লাহ।
এছাড়াও চিয়া সিড আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম, জিংক, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদানের দৈনন্দিন পুষ্টিচাহিদাকে পূরণ করতে সক্ষম হলেও এতে ফলেট, ভিটামিন এ এবং কপারের আধিক্য প্রায় নেই বললেই চলে। তবে এতে ভিটামিন বি-১ এর উৎস হিসেবে থায়ামিন (thiamine) রয়েছে দৈনন্দিন খাদ্য চাহিদার প্রায় ১৫ শতাংশ, এবং ভিটামিন বি-৩ এর উৎস হিসেবে নায়াসিন (niacin) রয়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ
সুপারফুড চিয়া সীডের ১৩ টি উপকারিতা:
১। চিয়া বীজ ওজন কমাতে সহায়তা করে।
২। চিয়া সীড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে
৩।এটা শক্তি এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে
৪। চিয়া সিড ব্লাড সুগার (রক্তের চিনি) স্বাভাবিক রাখে, ফলে ডায়াবেটিস ঝুঁকি কমায়
৫। চিয়া বীজ হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ উপকারি
৬। চিয়া সিড মলাশয় (colon) পরিষ্কার রাখে ফলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
৭। চিয়া সিড শরীর থেকে টক্সিন (বিষাক্ত পদার্থ) বের করে দেয়
৮। চিয়া সীড প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে
৯। চিয়া সীড ভাল ঘুম হতে সাহায্য করে
১০। চিয়া বীজ ক্যান্সার রোধ করে
১১। চিয়া সিড হজমে সহায়তা করে
১২। চিয়া বীজ হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করে
১৩। চিয়া সিড ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে
ওজন কমাতে কার্যকর
চিয়া সিডে উচ্চমাত্রার ফাইবার এবং প্রোটিন থাকায় যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য এটি বেশ উপকারী। প্রতি ২৮ গ্রাম চিয়া সিডে ১০ গ্রাম ডায়েটারি ফাইবার থাকে, যা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যচাহিদার প্রায় ৩৫%।
চিয়া সিডে বিদ্যমান ফাইবার বা খাদ্যআঁশ মূলত দ্রবণীয়। এটি পানি শোষণ করে জেলির ন্যায় থকথকে আঠালো বর্ণ ধারণ করে এবং আমাদের পাকস্থলীতে যেয়ে বিপাকপ্রক্রিয়ার গতি ধীর করে আনে। ফলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে এবং ক্ষুধা কম লাগে।
গবেষণা থেকে প্রমাণিত, দ্রবণীয় খাদ্যআঁশ আমাদের দেহে মেটাবোলিজম বুস্ট করে ওজন কমাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে যারা ওভারওয়েইট এবং ওবেসিটিতে আক্রান্ত।
২০০৯ সালের একটি গবেষণায় টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৭৭ জন স্থুলকায় ব্যক্তিকে ৬ মাসের জন্য চিয়া সিড সমৃদ্ধ সুষম খাদ্যাভ্যাসের রুটিন ফলো করানো হয়।
অপরদিকে, অন্য একটি দলকে শুধুমাত্র প্লেসবো (placebo) গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়। নির্দিষ্ট সময় পর দেখা যায় যে, চিয়া সিড গ্রহণকারী দলটি প্লেসবো গ্রহণকারী দলের তুলনায় ওজন দ্রুত কমাতে সক্ষম হয়েছেন, এমনকি এই সুষম খাদ্যাভ্যাসটি তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসে কোনরকম প্রভাবও ফেলেনি।
এছাড়াও, চিয়া সিডের প্রোটিন আমাদের ক্ষুধা নিবারণ এবং অতিরিক্ত খাদ্যগ্রহণের প্রবণতা কমিয়ে আনে। পাবমেড সেন্ট্রাল (PubMed Central) কর্তৃক প্রকাশিত একটি গবেষণায় দুইটি পৃথক দলকে দুইরকম খাবার প্রাতঃরাশে দেয়া হয়। প্রথম দলকে ৭ গ্রাম চিয়া সিড প্রতিদিন টকদইয়ের সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়, এবং ২য় দলকে চিয়া সিড ছাড়া শুধু টকদই খেতে দেয়া হয়।
কয়েকদিন ব্যাপী চলা এই গবেষণা শেষে দেখা যায় যে, যারা প্রাতঃরাশে শুধুমাত্র টকদই খেয়েছেন তাদের তুলনায় যারা টকদই এবং চিয়া সিডের মিশ্রণ খেয়েছেন তারা তুলনামূলকভাবে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের প্রবণতা কমিয়ে আনতে পেরেছেন এবং অল্পেই পূর্ণতা পেয়েছেন।
সুতরাং দেহের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে সুস্থ থাকার জন্য চিয়া সিডের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। তবে অবশ্যই ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিয়ে সুষম খাদ্যাভ্যাসের সঠিক নিয়ম মেনেই তা ডায়েট চার্টে যোগ করতে হবে।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম | how to eat chia seeds
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম অনেক রয়েছে। বিভিন্ন পদ্ধতিতেই চিয়া সিড খাওয়া যায়, যেমন:
স্মুথি বানিয়ে
সালাদ হিসেবে
ড্রিংকস তৈরি করে
চিয়া সিডকে আলাদা করে রান্না করা লাগে না, বরং এটি কিছু নির্দিষ্ট খাবারের (ওটস, পুডিং, জুস, স্মুদি ইত্যাদি) সাথে মিশিয়ে খেয়ে নেয়া যায়। এছাড়াও কেউ চাইলে টকদই, সিরিয়াল, রান্না করা সবজি বা সালাদের ওপরে ছড়িয়েও খেতে পারেন।