বাতাবি লেবুর পুষ্টিগুন এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা
গরমের দিনে আমাদের দেশে খুব পরিচিত একটি ফল- বাতাবি লেবু।আমরা অনেকেই না জেনেই খাচ্ছি খুব উপকারি এই ফলটি।
আসুন জেনে নেই এই ফলের পুষ্টি গুনাগুন
১.প্রতি ১০০ গ্রাম বাতাবি লেবুতে শর্করার পরিমাণ ৯.৩ গ্রাম, ক্যালরি পাওয়া যায় ৩৮ কিলোক্যালরি, সরল শর্করা পাওয়া যায় প্রায় ৭ গ্রাম।
২.বিটা ক্যারোটিন আছে প্রায় ১২০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন প্রায় ৬০ গ্রাম। কিছু পরিমাণে আছে ভিটামিন ‘বি’। কিছু পরিমাণ আছে প্রোটিন, ফ্যাট ও খাদ্য আঁশ।আর ভিটামিন সি ১০৫ মিলিগ্রাম।
৩.বাতাবি লেবুতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় এটি রোগপ্রতিরোধ এবং রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে।
৪.এই ভিটামিন বিভিন্ন ধরনের ভাইরাল ইনফেকশন, সর্দি-কাশি ও ঠাণ্ডার হাত থেকে রক্ষা করে এবং দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
৫.ভিটামিন সি দেহের ক্ষতস্থান দ্রুত নিরাময়ে সহায়তা করে, দেহের ত্বক মসৃণ ও ভালো রাখে। এর অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়, দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত ও পুঁজ নির্গত হয়। এ সমস্যাকে বলা হয় স্কার্ভি। স্কার্ভি হলে অকালে দাঁত পড়ে যায়।
৬.গর্ভবতী মা এবং গর্ভস্থ শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন সি অত্যন্ত দরকারি। বাতাবি লেবুতে ভিটামিন সি, কারোটিন থাকায় এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে দেহের বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৭.ভিটামিন সি এর অভাবে রক্তস্বল্পতা ও দুর্বলতা দেখা দেয়, রক্তপাত হলে সহজেই বন্ধ হয় না, শিশুদের দৈহিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
৮. ভিটামিন সি মুখ গহ্বর, পাকস্থলি, ফুসফুস, অগ্ন্যাশয় এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
৯. বাতাবি লেবুতে পর্যাপ্ত পেকটিন থাকায় স্কোয়াশ ও জেলি প্রস্তুতে এটি ব্যবহৃত হয়। বাতাবি লেবুর রস ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অত্যন্ত উপকারী।
১০.বাতাবি লেবুতে আছে ফ্যাট বার্নিং এনজাইম, যা শ্বেতসার ও সুগার শোষণ করে ওজন কমাতে সহায়তা করে।
১১.বাতাবি লেবুতে আছে প্রচুর পরিমাণে বায়োফ্যাভোনয়েড, যা ক্যানসার সেলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
১২.অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন থেকে শরীরকে মুক্ত রাখার কারণে ব্রেস্ট ক্যানসার চিকিৎসায় বাতাবি লেবু ভূমিকা রাখে।
১৩. এমনকি প্রোটেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধেও বাতাবি লেবু কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
১৪.বাতাবি লেবুতে আছে যথেষ্ট পরিমাণ পটাসিয়াম, ভিটামিন সি। ফলে বাতাবি লেবু রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
১৫.আর নিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ হৃদ্রোগের জন্য উপকারী। বাতাবি লেবু রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
১৬.অম্লজাতীয় হওয়ার কারণে খাদ্য পরিপাকে বাতাবি লেবু অত্যন্ত সহায়ক। খাদ্য পাচিত হওয়ার পর বাতাবি লেবুর রস অ্যালকালাইন রি-অ্যাকশন তৈরি করে হজমে সহায়তা করে।
সতর্কতা : তবে বিশেষ করে ফ্রিজে কখনও কাটা অবস্থায় লেবু বা বাতাবি লেবু বা কমলা সংরক্ষণ করবেন না। ফ্রিজের তাপমাত্রা অত্যন্ত কম থাকায় লেবুর অ্যাসিডিক গুণ নষ্ট হয়। ফ্রিজের কৃত্রিম ঠাণ্ডায় কমলালেবুর খোসা ও বাতাবি লেবু বা লেবুর শাঁস শুকিয়ে যায়। অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় সেগুলো খারাপ হয়ে বিষাক্ত হয়ে পড়তে পারে।