কোভিডের কারণে স্মৃতিভ্রম হলে



কোভিড থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের মাঝে ব্রেইন ফগ বা স্মৃতিভ্রম, কাজে মনোযোগ দিতে না পারা দেখা যাচ্ছে। এর পেছনের কারণ বের করতে গবেষণা চলছে।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, স্নায়বিক ও মানসিক কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে আপাতত সাধারণ কিন্তু খুবই কার্যকরী কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুম
সমস্যায় ভোগা ব্যক্তির যেন পর্যাপ্ত ঘুম হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। ঘুম আমাদের মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর করে, শরীরের ক্ষত সারিয়ে উঠতে ভূমিকা রাখে। এ কারণেই অধিকাংশ স্নায়বিক ওষুধ খাওয়ার ফলে ঘুম পায়।
ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম
শরীর ও মন চাঙা করতে শারীরিক বা কায়িক পরিশ্রমের বিকল্প নেই। যাঁরা পর্যাপ্ত কায়িক পরিশ্রম করতে পারেন না, তাঁদের কমপক্ষে ৩০ মিনিট এমন কিছু ব্যায়াম করতে হবে যেন ঘাম ঝরে, শ্বাস-প্রশ্বাসের ওঠানামা হয়। ব্রেইন ফগ বা মস্তিষ্কের ধোঁয়াশা কাটিয়ে উঠতে কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের বিকল্প নেই বললেই চলে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
করোনা-পরবর্তী সময়ে পরিমিত ও সুষম খাবার গ্রহণের প্রতি জোর দিতে হবে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, যেমন অসময়ে খাবার গ্রহণ, নাশতা না খাওয়া, চা, কফি, সিগারেট খাওয়ার মতো অভ্যাস বাদ দিতে হবে বা খুবই সীমিত করতে হবে। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় ফলমূল রাখতে হবে।
পারিবারিক সহায়তা
একজন মানুষ যদি অনেক কিছু ভুলে যান, তবে তাঁর মধ্যে এমনিতেই সার্বক্ষণিক দুশ্চিন্তা কাজ করতে পারে। যেমন, বাজারে গেলে কী কিনবেন অথবা এটিএম কার্ডের পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারেন। এই ভুলে যাওয়ার সময়টাতে পরিবারের সদস্যরা যদি পাশে থাকেন, তাহলে তা রোগীর জন্য ভালো। রোগী যে ক্লান্তি, অবসাদে ভুগছেন, ভুলে যাচ্ছেন, সেটা তিনি এমনি এমনি করছেন না, এর পেছনে কারণ আছে। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের লোকজন সেটা ধরতে না পেরে বকাঝকা করে, হাসি-তামাশা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। এগুলো রোগীর উপসর্গ কমানোর পরিবর্তে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। ভালো ঘুম, খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টি পরিবারের সদস্যরাই তদারক করতে পারেন। মোটকথা, সমস্যাগুলোকে সহমর্মিতার সঙ্গে বিবেচনা করে সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিকে যতটা পারা যায় সহযোগিতা করতে হবে।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়