আইসোলেশনে যা খাবেন
করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় খাদ্যাভ্যাস নিয়ে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় লিখেছেন পুষ্টিবিদ জেনিফার বিনতে হক। আপনাদের জন্য লেখাটি নিচে তুলে ধরা হলো।
করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হলে আক্রান্ত ব্যাক্ত ও তাঁর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের আইসোলেসনে থাকতে বলা হচ্ছে। মৃদু উপসর্গ আছে, এমন বেশির ভাগ রোগী বাড়িতে আইসোলেশনে থেকেই চিকিৎসা নিয়ে সেরে উঠেছেন। তবে শুধু চিকিৎসা নয়, আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাস আর খাবার পরিবেশনের পদ্ধতির দিকে নজর দেওয়াও ভীষন জরুরি।
১. করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি একটি আলাদা ঘরে থাকবেন। বাড়িতে ঘরের স্বল্পতা থাকলে একই ঘরে আলাদা পর্দা ঘেরা কোনায় থাকবেন। খাওয়ার সময় বাড়িতে সদ্য তৈরি খাবার তাঁর দরজার কাছে কেউ একজন রেখে আসবেন। তবে এ ক্ষেত্রে খাবার সরবরাহের দায়িত্ব পালন করবেন বাড়ির সবচেয়ে সুস্থ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিটি। তিনি খাবার দেওয়ার সময় অবশ্যই মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করবেন।
২. করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির প্লেট, গ্লাস, চামচ ও অন্যান্য ব্যবহার্য তৈজসপত্র সম্পূর্ণ আলাদা থাকবে। এসব জিনিসপত্র প্রতিবার ব্যবহারের পর গ্লাভস পরে ভালো করে সাবান-পানি দিয়ে পরিস্কার করে অন্যদের থালা-বাসন থেকে আলাদা করে রাখতে হবে।
৩. আক্রান্ত ব্যাক্তিকে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। বাড়িতে পরিচ্ছন্ন ভাবে ফোটানো বিশুদ্ধ পানি পরিস্কার বোতলে ভরে তাঁর ঘরে দিন। জ্বর থাকলে আরও বেশি পানি পান করতে হবে। ডাবের পানি, ফলের রস, লেবু পানি ইত্যদিও দেওয়া যায়।
৪. এ সময়ে যথেষ্ঠ পুস্টিকর খাবার খেতে হবে। খাবারে মাছ, মুরগি, ডাল ও বীজ জাতীয় খাবার, দুধ, ডিম ইত্যাদি থাকা চাই। এসব খাবার শক্তি জোগাবে ও ক্লান্তি দূর করবে। প্রচুর শাকসবজি ও ফলও খেতে হবে। ডায়াবেটিস বা কিডনির জটিলতা থাকলে খাবারে যেসব বিধিনিষেধ আছে তা মেনে চলবেন।
৫. খাবারে যথেস্ট ভিটামিন সি, বি6, এ, ডি, জিঙ্ক, ফলেট, আয়রন ও আঁশ থাকা দরকার। যে কারনে রোজ পর্যাপ্ত রঙিন শাকসবজি, ফলমূল, গাজর, মিস্টি আলু, পালংশাক, লেটুস, টমেটো, পেঁপে, কমলা, মাল্টা, লেবু, পেয়ারা, আম ইত্যাদি খাবেন। এ ছাড়া বাদাম, আখরোট, খেজুর, দই ইত্যাদি খেতে পারেন।
৬. কাশি ও গলা ব্যাথা থাকলে মধু, মধু ও দারুচিনি-লবঙ্গ-আদা মিশ্রিত গরম পানি বা লেবু-আদা-মধু মিশ্রিত লিকার চা, মুরগির গরম স্যুপ ইত্যাদি বারবার দিন। দারুটিনি, গোলমরিচ, কালিজিরা ইত্যাদিও কাশি. গলাব্যথা কমাতে সহায়ক।
৭. চিনিযুক্ত পানীয়, কেক, পেস্ট্রি ইত্যাদি না খাওয়া ভালো। এতে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি। সম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, বেশি তেলে ভাজা-পোড়া খাবারও দেবেন না রোগীকে। তাঁর খাবার সহজপাচ্য হওয়া চাই। কারণ, করোনা রোগীর হজমে সমস্যা, ডায়রিয়া, বমি হওয়াও বিচিত্র নয়। অরুচি বা ক্ষুদামন্দা খাকলে অল্প পরিমাণে খাবার বেশ কয়েকবারে দিন।