শরীর কর্মক্ষম রাখতে গ্রিন টির ভুমিকা
গ্রিন টি বা সবুজ চা যুগ যুগ ধরে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে দৈনন্দিন অনেক শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে কাজে গতিশীল ও চটপটে হয়ে ওঠা যায়। আসুন জেনে নিই কিভাবে গ্রিন টি আমাদের শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে।
গ্রিন টির রয়েছে নানান উপকারিতা। গ্রীন টি এর অসংখ্য গুণের অন্যতম গুণ হলো দেহের ওজন কমানোয় সহযোগিতা। যাদের অতিরিক্ত ওজন রয়েছে তারা গ্রীন টি নিয়মিত পান করে সহজেই সমস্যাটি থেকে মুক্তি পেতে পারেন। গ্রিন টি যেভাবে আমাদের শরীরে ওজন কমাতে ও ত্বকের যত্নে সাহায্য করে সেগুলো হলো-
১। গ্রীন টি তে ক্যাফেইন নামক উপাদান থাকে যা দেহের চর্বি ক্ষয় করতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন অনিদ্রাসহ আরও অনেক অসুস্থতার কারণ ঘটাতে পারে। গ্রীন টিতে কফির তুলনায় অনেক কম পরিমাণ ক্যাফেইন থাকে। তাই শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যাফেইন পেতে প্রতিদিন ২-৩ কাপ গ্রীন টি পান করতে হবে।
২। সবুজ চা এর মধ্যে শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান epigallocatechi nallate (EGCG) বিদ্যমান। ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী প্রধান বিষয় হলো শরীরে মেটাবোলিজমের স্বল্পতা। EGCG শরীরে থাকা মেটাবোলিজমের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। তাই শরীরে পর্যাপ্ত মেটাবোলিজমের জন্য নিয়মিত গ্রীন টি পান করতে হবে।
৩। আমাদের শরীরে কিছু ক্ষতিকর এনজাইম উৎপন্ন হয় যেগুলো দেহে অতিরিক্ত চর্বি ক্ষয়ের জন্য জরুরী “Norepinephrine” নামক হরমোন উৎপাদন ব্যহত করে। গ্রীন টি তে থাকা EGCG এই এনজাইম সমুহকে ধ্বংস করে এই হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তাই দেহের অতিরিক্ত চর্বি ক্ষয়ের জন্য নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি গ্রীন টি পান করা উচিত।
৪। গ্রীন টি ওজন বৃদ্ধিকারী অতিরিক্ত তরল উৎপাদন থেকে দেহকে রক্ষা করে। এতে থাকা বিভিন্ন উপাকারি উপাদান অতিরিক্ত তরল ঘাম এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দিয়ে দেহে প্রয়োজনাতিরিক্ত তরল উৎপাদনে বাধা দেয়। ফলে শরীর অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ হয়।
৫। গ্রীন টি তে “Catechin” নামক উপাদান থাকে যা আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বিকে শক্তিতে পরিণত করতে সাহায্য করে। ব্যায়াম শুরু করার পূর্বে গ্রীন টি পান করলে সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি সময় ধরে ব্যায়াম করা সম্ভব হয় যা শরীরের ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে।
৬। সৌন্দর্য চর্চার থেরাপিতেও গ্রিন টি এর ব্যবহার হয়। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এন্টিঅক্সিডেন্টের পাশাপাশি এতে অন্যান্য পুষ্টিগুণও বিদ্যমান। ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য গ্রিন টিকে স্টোর হাউসও বলা হয়। নিয়মিত এ চা পান করলে সূর্যের আলোর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বক রক্ষা পায়। ত্বকের ক্যানসার প্রতিরোধেও গ্রীন টির ভুমিকা রয়েছে। এছাড়া গ্রিন টি মাস্ক সরাসরি মুখমন্ডলেও ব্যবহার করা যায় যা মুখের মেছতা ও ব্রণসহ দাগ দূর করার ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখে। বলিরেখা দূর করে ত্বকের মসৃণতা বৃদ্ধিতেও এটি সাহায্য করে।
আজকাল আমাদের জীবনে চা পান একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবনের কর্ম ব্যস্ততায় এক কাপ চা পান না করলে প্রশান্তিই যেন আসেনা। যেহেতু গ্রিন টিতে বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্যকর উপাদান রয়েছে, তাই নিয়মিত গ্রিন টি পান করে আমরা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে নিজেকে মুক্ত ও কর্মক্ষম রাখতে পারি।