শিশুর কৃমি ও অপুষ্টি দূর করতে করণীয়
শিশুদের অপুষ্টিতে ভোগায় এমন অনেক সমস্যাগুলির মধ্যে কৃমির কারনে অপুষ্টি অন্যতম। শিশুরা প্রায়ই পেটে ব্যথার কথা বলে , খেতে চায় না, এবং খাবার নিয়ে অভিযোগ করে।
এই সময়ে, শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী প্রত্যেক শিশুকে অবশ্যই কৃমিনাশক দিতে হবে এবং অপুষ্টিদূর করতে শিশুর পুষ্টিকর খাবারের দিকে নজর দিতে হবে।
লক্ষন:
১. পেট ফোলা বা গ্যাস
২. ওজন কমে যাওয়া
৩. পেটে ব্যথা
৪. ঘন ঘন খাওয়া বা খাওয়ায় অনিহা
৫. জ্বর বা শুকনো কাশি
৬. প্রস্রাব করতে গেলে ব্যাথা
৭. ঘুমের সমস্যা
৮. খাদ্যে অরুচি,
৯. পাতলা পায়খানা,
১০. বমি বমি ভাব,
১১. পায়খানার রাস্তায় চুলকানি
১২. রক্তশূন্যতা
কিভাবে বুঝবেন?
শিশুর মল পরীক্ষার মাধ্যমে খুব সহজেই কৃমির উপদ্রব চিহ্নিত করা যায়।
খাদ্য ব্যবস্থাপনা:
কুমড়ো বীজ:
কুমড়োর বীজ কিউকারবিটাসিন নামক একটি অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এটি পরিপাকতন্ত্রের কৃমিকে প্যারালাইজড করে দেয় এবং পরে সহজেই মলের মাধ্যমে বের হয়ে যায়।
পেঁপে বীজ:
পেঁপের বীজে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট রয়েছে। এটিতে শক্তিশালী অ্যানথেলমিন্টিক এবং অ্যান্টিঅ্যামিবিক প্রপার্টিস রয়েছে যা অন্ত্রের পরজীবীগুলিকে মেরে ফেলে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মধুর সাথে পেঁপের বীজ অন্ত্রের পরজীবী অপসারণে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। পেঁপের বীজের গুঁড়ো গরম পানিতে মধুর সাথে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে শিশুকে দিতে পারেন ভালো ফলাফলের জন্য। আপনার শিশুকে দেওয়া যাবে কিনা তা অবশ্যই পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে দিন।
রসুন:
রসুনে কিছু অত্যন্ত কার্যকরী অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টি প্যারাসাইট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অন্ত্রের কৃমি এবং তাদের ডিম ধ্বংস করতে সাহায্য করে। ২ বছরের নিচের শিশুর জন্য মা খাবারে বা সালাদে নিয়মিত রসুন খেতে পারেন।
কাঁচাহলুদ
কাচাহলুদ অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। দুধের সাথে আধা চা চামচ হলুদ মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
গাজর
গাজর ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিনের বড় উৎস। এটি বাচ্চাদের কৃমি এবং অন্যান্য পেটের রোগেও সাহায্য করে। বিটা-ক্যারোটিন অন্ত্রের কৃমির ডিম ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। তবে অবশ্যই খুব ভালো ভাবে গাজর ধুয়ে নিতে হবে।
তুলসী
তুলসীর কৃমিনাশক গুণ রয়েছে। এটি হজমের সমস্যা, পেটের কৃমি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও উপকারী। তুলসী পাতার ঔষধি গুণ রয়েছে বলে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল প্রভাব রয়েছে, ভিটামিন সি এবং জিঙ্ক সমৃদ্ধ এবংরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ফিতাকৃমির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে শসর বীজ খাওয়াতে পারেন শিশুকে। শশার বীজ শুকিয়ে গুঁড়ো করে প্রতিদিন এক চা-চামচ করে খেলে কৃমির সমস্যায় দ্রুত ভালো হবে।
সচেতনতা:
প্রথমেই শিশুকে বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নিয়ে কৃমিনাশক দিতে হবে। একই সাথে পরিবারের সকলকে কৃমিনাশক গ্রহনের পরামর্শ দেওয়া হয়।
শিশুর খাবার প্রস্তুত করার আগে অবশ্যই হাত সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।
শিশুর জন্য ব্যাবহারের সকল হাড়ি পাতিল ও অনান্য সামগ্রী পরিষ্কার রাখতে হবে।
১. কাচা শাক সবজী শিশুকে দেওয়া যাবে না।
২. ডিম ভালো করে সিদ্ধ করে শিশুকে দিতে হবে।
৩. শিশুর খাবার পানি ও ব্যবহারের পানি ফুটিয়ে দিতে হবে।
৪. ফল খাওয়ানোর আগে খুব ভালো করে ধুয়ে দিতে হবে।