ফ্যাটি লিভার এর কারন ও প্রতিকার
“ফ্যাটি লিভার একটি Lifestyle Disorder” বর্তমান সময়ে অন্যতম প্রধান একটি Lifestyle Disorder- হলো ফ্যাটি লিভার। মানে এই রোগটি আামাদের নিজেদের জীবনযাপনের ধরনের জন্য তৈরি হয়েছে।
শরীরের পাওয়ার হাউজ হলো লিভার। আমরা যা খাই, লিভার সেটিকে ব্যবহারের উপযোগী করে। অনেক সময় খাবারের সাথে কিছু রোগ-জীবাণুও পেটে চলে যায়। লিভার এ জীবাণুগলো ধ্বংস করে। আর এগুলো ধ্বংসের মাধ্যমেই শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় ও শরীর সুস্থ থাকে।
ফ্যাটি লিভার :
“লিভার সেলের চারপাশেও কিছু চর্বি থাকে। এ চর্বির পরিমাণ কোনোভাবে বেশি হলে অর্থাৎ ১০ শতাংশের বেশি হলে সেটিকে “ফ্যাটি লিভার “বলা হয়।
ফ্যাটি লিভার রোগটি হল নিঃশব্দ ঘাতক। সাবধানে না থাকলে,এটি থেকে হয়ে থাকে লিভার সিরোসিস (Cirrhosis)। সোজা ভাষায়, সিরোসিস হলে লিভার শুকিয়ে যায়। এর ফলে তা কার্যক্ষমতা হারায়। এমনকি “লিভার ফেইলর” ও হতে পারে।
ফ্যাটি লিভার ডিজিজ মূলত ২ ধরনের হয়ে থাকে।
১. অ্যালকোহলিক অর্থাৎ অ্যালকোহল গ্রহণের কারণে।
২. নন-অ্যালকোহলিক অর্থাৎ অ্যালকোহল বাদে অন্য কোন কারণে।
কারনঃ
এছাড়া,
১. নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার প্রধানত যারা স্থূল এবং প্রক্রিয়াজাতকৃত মাংস বা Processed meat বেশি খায় তাদের মধ্যে লক্ষ্যণীয়।
২. বিভিন্ন মেডিসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া,
৩. রক্তে সুগারের পরিমাণ বেশি থাকা,অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
৪. রক্তে ফ্যাট বিশেষ করে ট্রাইগ্লিসারাইড বেশি থাকা
৫. কখনো কখনো খুব দ্রুত ওজন কমানো,
৬. বেশি পরিমাণ রিফাইন্ড শর্করা গ্রহণ,
৭. মদ্যপান বা জেনেটিক্স কারণে একজন মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হতে পারেন।
লক্ষণ
১. কোনও কারণ ছাড়া ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়া ফ্যাটি লিভারের উপসর্গ।
২. একটানা প্রস্রাবের রং হলুদ হতে থাকলে ও অতিরিক্ত দুর্গন্ধ থাকলে
৩. মিস্টির প্রতি অনেক বেশি আসক্তি,
৪. অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্ত হয়ে পড়লে,
বেশি দুর্বলতা
৫. অবসাদ
৬. চুলকানি
৭. চোখ ও চামড়ার রং হলুদ হয়ে যাওয়া
৮. পেটে ব্যথা
৯. পেটে পানি জমা
১০. হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
ফ্যাটি লিভার ডায়েট:
এই অসুখ কমানোর অন্যতম একটি বড় দাওয়াই হলো ডায়েট। লো ফ্যাট, লো ক্যালোরি ডায়েট ফ্যাটি লিভার হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়
ওজন কমানো:
১. এই রোগের ক্ষেত্রে ওজন কমানো হল মস্ত বড় অস্ত্র।
পাশাপাশি আপনাকে ঠিকমতো ঘুমাতে হবে। অন্তত ৬ ঘণ্টা।
২. দিনে অন্তত ৪৫ মিনিট ব্যায়াম হল মাস্ট।
৩. Healthy lifestyle ও অ্যাক্টিভ থাকতে হবে।
কোন ধরনের খাবার খাবেনঃ
১. প্রচুর ফল ও সবজি
২. ফাইবার বা খাদ্য আঁশ সমৃদ্ধ সবজি ও শস্য
খুব কম পরিমাণে খাবেন
# চিনি,
#লবণ,
#রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা এবং
#সম্পৃক্ত ফ্যাট।
#বেকারী ফুড।
কোনগুলো বাদ দিবেন?
(১) অ্যালকোহল
এটি ফ্যাটি লিভার এবং অন্যান্য লিভার সমস্যার অন্যতম প্রধান একটি কারণ।
(২) মিষ্টি জাতীয় খাবার
অতিরিক্ত মিষ্টি দিয়ে বানানো বিস্কুট, চকোলেট, ফ্রুট জুস খুব তাড়াতাড়ি ওজন বাড়ায় এবং লিভারে ফ্যাট জমায়।
(৩) তেলে ভাঁজা খাবার
তেলে ভাঁজা খাবারগুলো হাই ফ্যাট ও হাই ক্যালোরির হয়ে থাকে।
(৪) অতিরিক্ত লবণ
অতিরিক্ত লবণ দেহে অতিরিক্ত পানি ধরে রাখে, ফলে শরীরে পানি জমে যাওয়া শুরু করে।
(৫) লাল মাংস
গরু ও খাসির মাংস, চর্বি শরীরের কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয় এবং লিভারে ফ্যাট জমায়।
কোন টেস্টে বোঝা যায়?
এক্ষেত্রে ফ্যাটি লিভারের কিছু টেস্ট (Fatty Liver Test) রয়েছে।
১. লিভার ফাংশন টেস্ট (Liver Function Test)।
২. SGOT, SGPT-এর মতো এনজাইম বেশি থাকলে,
৩. USG অ্যাবডোমেন।
৪. এছাড়া চাইলে লিভারের MRI করা যেতে পারে।