করোনায় সতর্কতা
করোনা মহামারীর এই সময়ে বিভিন্ন উপসর্গ ও সতর্কতা নিয়ে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় লিখেছেন মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. আজিজুর রহমান। আপনাদের জন্য লেখাটি নিচে তুলে ধরা হলো।
ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে অনেকেরই সর্দি-কাশি, জ্বর হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থাকায় অনেকেই ভয় পেয়ে যাচ্ছেন। তবে ভয় না পেয়ে সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা জরুরী। একই সঙ্গে নিজের উপসর্গ সতর্কভাবে লক্ষ করতে হবে।
যা লক্ষ করবেন
নভেল করোনাভাইরাস নতুন। তাই এখন পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ি, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে উপসর্গ হলো জ্বর ও শুকনো কাশি। কারও কারও ডায়রিয়াও হতে পারে। দুর্বলতা ও ক্লান্তও লাগতে পারে। শুধু এসব উপসর্গ থাকলে আপনার হাসপাতালে না গেলেও চলবে। গুরুতর কোন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কিনা, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- লক্ষণ দেখা দেয়ার প্রায় শুরু থেকেই প্রচন্ড পেট ব্যাথা, শ্বাস নিতে কষ্ট, প্রচন্ড ক্লান্তি আর তীব্র মাথাব্যাথা থাকা উদ্বেগজনক।
- শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা, খাবার খেতে বা পানি পান করতে অসুবিধা। মিনিটে শ্বাসপ্রশ্বাসের হার নির্ণয় করুন। শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি ২৪ থেকে ৩০ বার বা তার বেশি হলে সতর্ক হোন।
- প্রথম উপসর্গ দেখা দেয়ার পর দ্বিতীয় সপ্তাহটি খুব গুরুত্বপূর্ন। গবেষকরা বলছেন, এই সময়ই হঠাৎ কারও কারও অবস্থার অবনতি ঘটে। তাই এক সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, অসুস্থতা বা অসংলগ্নতা দেখা দিলে দেরি না করে কাছের সরকারি হাসপাতালে যান কিংবা সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন।
- যাদের ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ আছে, যাদের কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়েছে কিংবা কেমোথেরাপি নিচ্ছেন, তারা করোনার সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি বলেছে, স্থুলতা, ফুসফুসের যেকোন রোগে (যেমন, হাঁপানি, ব্রংকাইটিস) ভুগছেন যারা, তারাও ঝুকিতে আছেন। এ ধরনের ব্যক্তিদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
বাড়িতে যা করবেন
- করোনার উপসর্গ দেখা দিলে নিজেকে আর সবার থেকে আলাদা করে ফেলুন। আলাদা কক্ষ ও টয়লেট ব্যবহার করা ভালো। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে মুখে মাস্ক পড়ুন, থালাবাটি আলাদা করুন। বিছানাও আলাদা করে ফেলুন।
- প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন। প্রচুর পানি পান করুন। গরম চা বা পানীয় পান করতে পারেন। জ্বরের জন্য জলপট্টি বা ঠান্ডা সেক দেয়া যাবে।
- উপুড় হয়ে কিছুক্ষন পাকস্থলীর উপর চাপ দিয়ে শোবেন, আর ফুসফুস ভরে শ্বাস নেবেন। শ্বাসপ্রশ্বাস বাড়ানোর ব্যায়াম করুন।
- পুষ্টিকর খাবার খান। বিশ্রাম করুন।
- প্রতিদিন দিনে দুই-তিনবার শরীরের তাপমাত্রা, শ্বাসপ্রশ্বাসে হার নির্ণয় করে ছক করে লিখে রাখুন।
- পরিবারের সদস্য ও অন্যদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করুন, নিজের সর্বশেষ পরিস্থিতে তাদের জানান।