করোনাভাইরাসের লক্ষণ ও করনীয়
বর্তমান সময়ে সারা বিশ্বকে একযোগে আতঙ্কিত করে রেখেছে নভেল করোনাভাইরাস। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থেকে শুরু করে অতি সাধারণ মানুষ কেউই এর হাত থেকে নিরাপদ নন। এটি এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস যা এর আগে কখনো মানুষের মধ্যে ছড়ায়নি।
করোনাভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ছয়টি প্রজাতি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে বলে আগে ধারণা করা হতো। নতুন এই ভাইরাসটির কারণে সেই সংখ্যা এখন থেকে হবে সাতটি। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগটির আনুষ্ঠানিক নাম দেয় কোভিড-১৯, যা 'করোনাভাইরাস ডিজিজ ২০১৯'-এর সংক্ষিপ্ত রূপ।
করোনাভাইরাস ১৯৬০-এর দশকে প্রথম আবিষ্কৃত হয়। প্রথমদিকে মুরগির মধ্যে সংক্রামক ব্রঙ্কাইটিস ভাইরাস হিসেবে এটি প্রথম দেখা যায়। পরে সাধারণ সর্দিকাশিতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এরকম দুই ধরনের ভাইরাস পাওয়া যায়। মানুষের মধ্যে পাওয়া ভাইরাস দুটি ‘মনুষ্য করোনাভাইরাস ২২৯ই’ এবং ‘মনুষ্য করোনাভাইরাস ওসি৪৩’ নামে নামকরণ করা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় ভাইরাসটির আরও বেশ কিছু প্রজাতি পাওয়া যায়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০০৩ সালের ‘এসএআরএস-সিওভি’, ২০০৪ সালের ‘এইচসিওভি এনএল৬৩’, ২০০৫ সালের ‘এইচকেইউ১’, ২০১২ সালের ‘এমইআরএস-সিওভি’ এবং সর্বশেষ ২০১৯ সালের ‘নভেল করোনাভাইরাস’।
নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) যেভাবে ছড়ায়:
মারাত্মক ছোঁয়াচে এই ভাইরাস একজন মানুষ থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়ায়। শারীরিক ঘনিষ্ঠতা, এমনকি করমর্দন থেকেও এটি ছড়াতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত বা হাতের ছোঁয়া লাগা কোনো জিনিস থেকেও তা ছড়াতে পারে। হাঁচি-কাশি থেকেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুকি রোধে করণীয়:
-
ঘন ঘন দুই হাত সাবান পানি দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড যাবত ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
-
যেখানে সেখানে কফ ও থুতু ফেলবেন না। হাত দিয়ে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
-
হাঁচি-কাশির সময়ে টিস্যু অথবা কাপড় দিয়ে বা বাহুর ভাঁজে নাক-মুখ ঢেকে ফেলুন। ব্যবহৃত টিস্যু ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলুন ও হাত পরিষ্কার করুন।
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)-এর সাধারণ লক্ষণসমূহ:
-
জ্বর
-
কাশি
-
শ্বাসকষ্ট
উপরে বর্ণিত লক্ষণসমূহ কারও মধ্যে দেখা দিলে সাথে সাথেই সতর্কতা অবলম্বন শুরু করা উচিত।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশ থেকে আসা অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার ১৪ দিনের মধ্যে উপরের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে যা করবেন –
-
নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন।
-
সুস্থ ব্যক্তি হতে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।
-
আইইডিসিআর-এর হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন।
নভেল করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক বা টিকা এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। তাই সাবধানী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা তাদের সংস্পর্শে আসা কারও কাছাকাছি যাবেন না। বারবার সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন। অপরিষ্কার হাত চোখ-মুখে দেবেন না। আরও সতর্কতার অংশ হিসেবে মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। পাশাপাশি, ময়লা পোশাক এড়িয়ে চলুন। বাসা পরিষ্কার রাখুন। সচেতনতা অবলম্বন করুন। নিজে সুস্থ থাকুন। আপনার আশেপাশে যারা আছেন তাদেরকেও সুস্থ থাকতে সহায়তা করুন।
স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক এরকম আরও তথ্য পেতে নিয়মিত চোখ রাখুন ডাক্তারভাই অ্যাপে।